মহামারী ভাইরাস কোভিড-১৯ এর বিশ্বব্যাপী সংক্রমনে বাংলাদেশও আক্রান্ত। বাংলাদশে এই মহামারি ভাইরাসের আক্রমনের ফলে মাছ ও চিংড়ি চাষে ইতিমধ্যে ২ মাস চাষকালীন সময়কাল অপচয় হয়েছে যা আগামী বছর ঠিক এই সময়ে এর প্রভাব সুস্পষ্ট হবে উৎপাদন পরিক্রমায়। মাছ ও চিংড়ি চাষ মুলতঃ মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বলবৎ থাকে কারণ এ সময়েই মাছ ও চিংড়ি বৃদ্ধি দ্রুত হয়ে থাকে। এ কারণে আমাদের মাছ ও চিংড়ি চাষীগণ সারা বছর ধরে কর্মপরিকল্পনা করে মার্চ/এপ্রিলের মধ্যে তাদের ঘেরে মাছ ও চিংড়ির পোনা মজুদ করে । এমতাবস্থায় দেশব্যাপী লকডাউনের কারনে নির্ধারিত সময়ে অধিকাংশ মাছ ও চিংড়ি চাষী তাদের ঘেরে পোনা মজুদ করতে পারেননি। এ ক্ষতি অপূরনীয়। কিন্ত এখনও সময় আছে আমরা একটু সচেতন হলে এই সময়কালটি উসুল করে নিতে পারি। এজন্য দরকার নতুন কর্মউদ্দীপনা ও কর্মকৌশল। প্রথম কর্মকৌশল হলো মাছের পোনার ক্ষেত্রে মজুদকালীন পোনা আকার হবে ৪/৫টিতে কেজি (একমাত্র পুটি মাছের পোনা বাদে) এবং শতকে সর্বোচ্চ ১৫টি পোনা মজুদ করতে হবে। আর গলদা/বাগদা চিংড়ির ক্ষেত্রে সরাসরি ঘেরে রেনু/পিএল মজুদ না করে ১৫-২১ দিন নার্সিং করে ঘেরে মুজদ করতে হবে। চিংড়ির নার্সিং বিষয়ে নোটিশ বোর্ডে একটি ছোট আকারে লেখা ইতিমধ্যে দেওয়া আছে। যথাযথভাবে নার্সিং এর পরে শতক প্রতি একই সাইজের/আকারের গলদা চিংড়ি ৬০-৭০টি এবং বাগদা চিংড়ির ক্ষেত্রে ১২০-১৫০টি মজুদ করতে হবে। তাহলে আমরা কমপক্ষে মাছ চাষের ১৫-২০দিন অপচয়কৃত সময় ফেরত পাব। দ্বিতীয় কর্মকৌশল হলো এ অঞ্চলের চাষীদের তাদের মাছ ও চিংড়ির খাদ্য হিসাবে সাধারনত নিয়মিত উন্নত মানের পুষ্টিসমৃদ্ধ সম্পুরক খাদ্য ব্যবহার করে না। ফলে মাছ ও চিংড়ি বৃদ্ধি তুলনামুলকভাবে কম হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে নিয়মিত পুষ্টিসমৃদ্ধ সম্পুরক খাদ্য ব্যবহার করতে হবে এবং পাশাপাশি ঘেরে প্রাকৃৃতিক খাদ্য তৈরীর জন্য শতক প্রতি ১০০ গ্রাম হারে ইউরিয়া এবং টিএসপি সার ব্যবহার করতে হবে। তবে চিংড়ি প্রধান ঘেরে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে শতক প্রতি ৭৫-১০০গ্রাম হারে অটোকুড়া, ৭৫-১০০গ্রাম হারে চিটাগুড় এবং প্রতি ৩৩ শতকের জন্য ৩-৪ চা চামচ ইস্ট একত্রে মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে (ব্যবহারবিধি ইতিমধ্যে পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে)। পানির পিএইচ পরিমাপ করে অটোকুড়া ও চিটাগুড় ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। পানির পিএইচ বেশি থাকলে শতক প্রতি চিটাগুড় সর্বোচ্চ মাত্রা এবং অটোকুড়া নিম্নমাত্রায় ব্যবহার করতে হবে। এ ছাড়া চাষকালীন সময়ে যে কোন পরামর্শ বা ঘেরের মাটি ও পানি পরীক্ষা বিনামূল্যে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসারের কার্যালয়, চিতলমারী, বাগেরহাট থেকে প্রদান করা হয়। যোগাযোগের ঠিকানা- ০১৭৬৯-৪৫৯৪৮০ (অফিসিয়াল)
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস